ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি - ওয়েবসাইট তৈরির ধাপসমূহ

সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে ২০২৪ সালে এসে “ওয়েবসাইট” শব্দটি বেশিরভাগ মানুষের জন্য পরিচিত একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মানুষ পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়েছে। ইন্টারনেট এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর মূল উপাদান হল ওয়েবসাইট। যদিও অনেকেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয় করার পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানেন না। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা এই বিষয়গুলির বিস্তারিত আলোচনা করবো। পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি জানতে পারবেন ওয়েবসাইট আসলে কী এবং ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কীভাবে আয় করা সম্ভব। চলুন আর দেরি না করে শুরু করি। ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি

ওয়েবসাইট কী

ওয়েবসাইট হল বিভিন্ন ধরনের ওয়েব পেজ, ছবি, ভিডিও ও অডিও এবং অন্যান্য তথ্যের সমাহার যা একটি ওয়েব সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজেই প্রবেশ হয়। ইন্টারনেটের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে ওয়েবসাইটের গুরুত্ব অপরিসীম। সাধারণভাবে একটি ওয়েব পেজ হচ্ছে একটি HTML ডকুমেন্ট যা HTTP (HyperText Transfer Protocol) প্রোটোকলের মাধ্যমে ওয়েব সার্ভার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজারে স্থানান্তরিত হয়। প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের একটি বিশেষ নাম থাকে এবং একই ডোমেইনের অধীনে অনেকগুলো ওয়েব পেজ একত্রিত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করে। পৃথিবীর সকল উন্মুক্ত ওয়েবসাইট মিলিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’ (www – World Wide Web) গঠন করে। কিছু ওয়েবসাইট শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য। আশাকরি ওয়েবসাইট কি বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পেরেছেন। ওয়েবসাইট কি

ওয়েবসাইটের যাত্রা

আমরা জানি ওয়েবসাইটের ইতিহাস শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। যখন ব্রিটিশ পদার্থবিদ টিম বার্নার্স-লি CERN (European Council for Nuclear Research) এ কর্মরত অবস্থায় ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) আবিষ্কার করেন। তাঁর এই আবিষ্কার ইন্টারনেটের জগতে একটি বিশাল পরিবর্তন এনে দেয়। ১৯৯৩ সালের ৩০ এপ্রিল CERN ঘোষণা করে যে ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব যে কেউ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবে। এই ঘোষণা ইন্টারনেটের বিস্তার ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ওয়েবসাইটের কাজ

ওয়েবসাইট হচ্ছে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন ধরণের ফাইল ও তথ্য এবং কোড একটি ফিজিক্যাল হোস্টিং সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে। এই সার্ভারে সাইটের কোড, ছবি ও ভিডিও এবং অন্যান্য ফাইলগুলো রাখা হয়। প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটি আইপি ঠিকানা (Internet Protocol address – IP) থাকে। যখন আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে একটি সার্ভারে হোস্ট করেন এবং ডোমেইন যুক্ত করেন তখন ব্যবহারকারীরা সহজেই আপনার সাইটে প্রবেশ করতে পারে। আশাকরি এই বিষয়ে ধারণা পেয়েছেন।

প্রাথমিক পর্যায় ওয়েবসাইট

আপনি জানেন কি শুরুর দিকে ওয়েবসাইটগুলো ছিল সম্পূর্ণ টেক্সট-ভিত্তিক। এতে কিছু ছবি শিরোনাম ও অনুচ্ছেদ ছাড়া বিশেষ কোনো ডিজাইন ছিল না। সেই সময়ের ওয়েবসাইটগুলির ডিজাইন ছিল খুবই সরল এবং বর্তমানের মতো আধুনিক ও আকর্ষণীয় ছিল না। বর্তমানে ওয়েবসাইট আধুনিক এবং অনেক আকর্ষণীয়। আশাকরি সম্পুর্ন ভাবে বুঝতে পেরেছেন।

বর্তমানের ওয়েবসাইট

আজকাল ওয়েবসাইটের ডিজাইন এবং কার্যকারিতায় বিশাল পরিবর্তন এসেছে। গ্রাফিক্স ও ভিজ্যুয়াল উপাদানের ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। আগে ওয়েবসাইট ডিজাইন মূলত মৌলিক HTML এর ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখন বিভিন্ন কোডিং ভাষার সাহায্যে যেমন Java, JavaScript, css ও php এবং Python ওয়েবসাইটগুলোকে আরও আকর্ষণীয় ও ইন্টারেক্টিভ করা সম্ভব এবং বর্তমানে তাই করে থাক। বর্তমানের ওয়েবসাইটগুলো এখন শুধু তথ্য প্রদানের মাধ্যম নয় বরং ব্যবহারকারীদের সাথে ইন্টারেকশন এবং যোগাযোগেরও মাধ্যম। এটি ওয়েবসাইটকে তথ্যভান্ডারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। উদাহরণস্বরূপ সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহারকারীদের ছবি ও ভিডিও এবং অন্যান্য কনটেন্ট শেয়ার করার সুযোগ দেয়। গুগল সার্চ ইঞ্জিন আমাদের তথ্য খোঁজার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করেছে। ইউটিউব ভিডিও শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিনোদন ও শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এছাড়াও ফেসবুকে দিকে তাকলে আমরা দেখতে পারি ফেসবুক বর্তমানে কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফেসবুকে আমরা ইচ্ছে মতো পোষ্ট করতে পারি এবং অন্যান্যদের পোষ্ট দেখতে পারি যেমন টেক্সট ও ভিডিও ইত্যাদি। এছাড়াও ফেসবুকে মেসেজ ও অডিও ভিডিও কলের মাধ্যমে সবার সাথে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারি।

ওয়েবসাইটের ভবিষ্যৎ কি

ওয়েবসাইটের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক আশাবাদী হওয়া যায়। উন্নত প্রযুক্তি এবং ক্রমবর্ধমান ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের উন্নয়ন নতুন সম্ভাবনার দরজা খোলেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও মেশিন লার্নিং এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) এর মতো নতুন প্রযুক্তিগুলি ওয়েবসাইটগুলোকে আরও ইন্টারেক্টিভ এবং ব্যবহারকারীর জন্য আকর্ষণীয় করে তুলবে। যতদিন যাবে ততই আরো নতুন নতুন টুলস বের হবে এবং আকর্ষণীয় ভাবে ডিজাইন করে ওয়েবসাইট তৈরি করা যাবে। বর্তমানে ওয়েবসাইট আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেট এবং ওয়েবসাইটের এ অগ্রগতি আমাদের তথ্য প্রাপ্তি ও যোগাযোগ এবং বিনোদনের অভিজ্ঞতাকে পরিবর্তন করেছে। ভবিষ্যতেও তা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আশাকরি আমরা এই বিষয়টি সুন্দর ভাবে বুঝতে পেরেছি। ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম

ওয়েবসাইটের উপযোগিতা

এখন আমরা জানবো ওয়েবসাইটের উপযোগিতা নিয়ে। ওয়েবসাইটের মূল কাজ হলো তথ্য সরবরাহ করা এবং যোগাযোগের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করা। উদাহরণস্বরূপ যখন আমাদের একটি বিষয়ে কিছু জানতে হয় আমরা গুগল ও বিং এবং ইউটিউব বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে অনুসন্ধান করে থাকি। এই ওয়েবসাইটগুলো আমাদের প্রয়োজনীয় ফলাফল দেয় যা থেকে আমরা সঠিক তথ্য এবং সমাধান পেতে পারি। আশাকরি বুঝাতে পেরেছি বিষয়টি।

বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের ব্যবহার

বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা উপায়ে সাহায্য করে বা ব্যবহার করে থাকি। যেমন:

১. ব্লগ সাইট:যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়।

২. ফোরাম সাইট:যেখানে ইউজাররা নতুন নতুন টপিক নিয়ে লিখতে পারে।

৩. অনলাইন গেমিং সাইট: যেখানে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন গেম খেলতে পারেন।

৪. মিউজিক সাইট: যেখানে গান শোনা এবং ডাউনলোড করা যায়।

৫. ডাউনলোড সাইট: যেখানে নানা ধরনের ফাইল ডাউনলোড করা যায়।

৬. খবরের সাইট: যা লাইভ স্ট্রিমিং ও সংবাদ প্রদান করে।

এছাড়াও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট প্রকাশ করতে পারেন যা অন্যরা দেখতে ও ব্যবহার করতে পারে এবং বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা পেতে পারে।

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ

একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি নানা উপায়ে আয় করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ আপনি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে ও পণ্য বিক্রি করে অথবা বিভিন্ন সেবা প্রদান করে আয় করতে পারেন। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার বার্তা বা পণ্য সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেন যা অন্য কোন মাধ্যমে সম্ভব নয়। এটি আপনার ব্যবসার প্রচারণা এবং সম্প্রসারণের জন্য একটি শক্তিশালী উপায়। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।

ব্যবসা ও প্রচারণার ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের গুরুত্ব

বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশে বেশীরভাগ মানুষ এখন অনলাইন কেনাকাটা করে থাকে। নিজের পছন্দ মতো নিতে পারে পোষাক থেকে শুরু করে যেকোনো পন্য তাও একদম ঘরে বসে। তাই একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসাকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ একজন ব্যক্তি সরাসরি পৃথিবীজুড়ে ভ্রমণ করতে না পারলেও একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তার প্রতিভা ও প্রতিষ্ঠান বা পণ্যকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচার করতে পারেন‌ ওয়েবসাইটে আপনার সংস্থার পরিচিতি, কাজের ধরন, পণ্যের গুণমান, ক্লায়েন্ট রিভিউ ও অর্ডার প্রক্রিয়া এবং যোগাযোগের তথ্য উপস্থাপন করা সম্ভব। এখন বর্তমানে অনলাইনে ব্যবসা করে অনেকেই লাভবান হচ্ছে। অনলাইন ব্যবসা বর্তমানে জনপ্রিয় ব্যবসা হয়ে উঠেছে।

ফ্রি-ওয়েবসাইট তৈরির জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম

আজকের দিনে একটি ওয়েবসাইট থাকা মানে আপনি আপনার প্রতিযোগীদের থেকে অনেক এগিয়ে আছেন। ইন্টারনেটের বিস্তারের এই যুগে অনেক প্ল্যাটফর্ম আপনাকে বিনামূল্যে ওয়েব হোস্টিং করার সুযোগ দেয়। আগে ওয়েবসাইট তৈরি করতে অনেক টাকা খরচ হতো কিন্তু এখন আপনি সহজেই ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। এখানে কিছু জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম উল্লেখ করা হলো:

১. ব্লগার (Blogger) ব্লগার ১ নম্বরে রাখা হয়েছে কারণ নতুনদের জন্য ব্লগার একটি জনপ্রিয় ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম যা ১৯৯৯ সালে Pyra Labs দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৩ সালে গুগল এটি কিনে নেয় এবং ওয়েব হোস্টিং সুবিধা যোগ করে। ব্লগার ব্যবহার করে সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় এবং একজন ব্যবহারকারী সর্বাধিক ১০০টি ব্লগ পরিচালনা করতে পারেন। ব্লগার ব্যবহারের জন্য একটি গুগল একাউন্ট প্রয়োজন। তবে এটি কেবল ব্লগ তৈরির জন্য উপযুক্ত ব্যবসায়িক বা অন্যান্য ওয়েবসাইট তৈরির জন্য নয়। ব্লগারে বিভিন্ন টেমপ্লেট পাওয়া যায় যা দিয়ে আপনি আপনার সাইটকে সহজেই কাস্টমাইজ করতে পারেন। Drag-and-Drop ফিচারের মাধ্যমে ব্লগগুলো সহজেই পরিবর্তন করা যায়। ব্লগস্পটের মাধ্যমে আপনি বিনামূল্যে একটি ডোমেইন নামও পেতে পারেন। নতুনদের জন্য খুবই চমৎকার একটি প্লাটফর্ম। আপনি চাইলে ব্লগার ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।

২. ওয়র্ডপ্রেস (WordPress) ওয়ার্ডপ্রেস বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং চাহিদাসম্পন্ন ওয়েবসাইট তৈরির প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বব্যাপী ৮১০ মিলিয়নেরও বেশি ওয়েবসাইট ওয়র্ডপ্রেস ব্যবহার করে যা মোট ওয়েবসাইটের প্রায় ৪৩%। ওয়র্ডপ্রেসের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ব্লগিং তবে এখন এটি মোবাইল প্রেজেন্টেশন, ব্যবসা ও শিক্ষা এবং ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে শুরু করতে পারেন।

৩. উইক্স (Wix) নতুনদের জন্য এবং মোবাইল ইউজারদের জন্য উইক্স একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট বিল্ডিং প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সুবিধা প্রদান করে। উইক্সের মাধ্যমে ১৬০ মিলিয়নেরও বেশি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে এবং মোবাইলের মাধ্যমে সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব যা বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। উইক্স প্ল্যাটফর্মে অ্যানিমেশন আর্টিফিশিয়াল ডিজাইন ইন্টেলিজেন্স (ADI) প্রযুক্তি এবং অ্যাপ মার্কেট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। এখানে শতাধিক অ্যাপ ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা উন্নত করা যায়। এছাড়া ওয়েবসাইটের ব্যাকএন্ড এবং SEO এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং উন্নত করা সম্ভব। ফ্রি প্ল্যানের মাধ্যমে উইক্স ৫০০এমবি স্টোরেজ প্রদান করে এর বেশি না। এই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে আপনি সহজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন যা আপনার ব্যবসা এবং প্রতিভা বা পণ্যকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।

ওয়েবসাইট থেকে আয় করার সহজ উপায়

কিছুদিন আগে মানুষ জানতো না যে ওয়েবসাইট থেকে আয় করা সম্ভব। তখন ওয়েবসাইটের মূল উদ্দেশ্য ছিল তথ্য বা বিনোদনমূলক খবর প্রদান। কিন্তু বর্তমানে আপনি ঘরে বসেই ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে কিছু সময় লাগবে এবং আপনার পরিশ্রম ও ধৈর্য প্রয়োজন। আপনার ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিটর আসা শুরু হলে আপনি আয় করার বিভিন্ন উপায় খুঁজে পাবেন। এখানে কিছু জনপ্রিয় উপায় দেওয়া হলো:

১. গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense): গুগল অ্যাডসেন্স একটি সহজ ও লাভজনক উপায়। যখন আপনার ওয়েবসাইটে কিছু ভিজিটর আসা শুরু করবে তখন আপনি গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। অ্যাকাউন্ট অনুমোদিত হলে আপনি ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন। ভিজিটররা বিজ্ঞাপন দেখলে এবং ক্লিক করলে আপনি আয় করতে পারবেন। আপনার আয় নির্ভর করবে ওয়েবসাইটের ভিজিটর সংখ্যা এবং বিজ্ঞাপনের অবস্থানের ওপর। গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আপনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় করতে পারেন।

২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing): অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনলাইনে আয় করার একটি জনপ্রিয় উপায়। যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভালো পরিমাণে ট্রাফিক থাকে তবে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। বিভিন্ন ডিজিটাল প্রোডাক্ট কোম্পানি বা ই-কমার্স সাইটের পণ্য প্রচার করে আপনি কমিশন পেতে পারেন। এছাড়া আপনার নিজের পণ্যও বিক্রি করতে পারেন।

৪. নিজের পণ্য বিক্রি: অনলাইনে পণ্য বিক্রি করা সহজ এবং কার্যকর। আপনি ঘরে বসেই আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন। বিভিন্ন প্রকারের আর্টিকেল প্রকাশ করে পণ্য বিক্রি করে আয় করা সম্ভব। যেমন স্বাস্থ্য বিষয়ক পন্য বা ডিজিটাল পন্য নিয়ে কাজ করতে পারেন।

৩. স্পন্সর (Sponsor): গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য অনুমোদিত হতে কিছু সময় লাগতে পারে। এই সময়ে আপনি সরাসরি বিজ্ঞাপন দেখাতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পানি থেকে স্পন্সর নিতে পারেন। এই পদ্ধতিতে আপনার আয় ট্রাফিকের ওপর নির্ভর করে না বরং বিজ্ঞাপনদাতাদের চুক্তির ওপর নির্ভর করে।

৫. ওয়েবসাইট তৈরি ও বিক্রি: যদি আপনি WordPress বা Blogger এছাড়াও WIX ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন তাহলে সেগুলো বিক্রি করে আয় করতে পারেন। বর্তমানে অনেক ব্যক্তি বা কোম্পানি তাদের পোর্টফোলিওর জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চায়। আপনি তাদের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে অথবা প্ল্যাটফর্ম যেমন Empire Flippers, Flippa ইত্যাদিতে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।

ওয়েবসাইট তৈরির ধাপসমূহ

ওয়েবসাইট তৈরির ধাপসমূহ

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনাকে যেকোনো প্লাটফর্মে একাউন্ট খুলতে হবে। যেমন ধরুন ব্লগার (Blogger) বা ওয়ার্ডপ্রেস(WordPress) অথবা উইক্স(Wix) ইত্যাদি প্লাটফর্মে আপনাকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। একাউন্ট তৈরি করা হয়ে গেলে আপনাকে ডোমেইন (Domain) এবং হোস্টিং (Hosting) কিনতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে নেওয়া হলে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরির জন্য প্রস্তুত। আপনি আপনার মন মতো সুন্দর করে ডিজাইন করে ওয়েবসাইট তৈরি করুন।

সর্বশেষে বলি

এই উপায়গুলো অনুসরণ করে এবং একটি পরিকল্পিত কৌশলের মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে সক্ষম হবেন। ধৈর্য এবং নিয়মিত পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটকে একটি সফল আয়ের উৎসে পরিণত করতে পারবেন। মনে রাখবেন ওয়েবসাইট তৈরি করার সাথে সাথে আয় করার চিন্তা ভাবনা করবেন না। আপনি একটি সুন্দর করে ওয়েবসাইট তৈরি করুন। আপনার ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট একটি নিশের ভিতরে রাখুন। ওয়েবসাইটে বেশি বেশি পোষ্ট করুন। ওয়েবসাইট এসইও করুন। ওয়েবসাইট গুগল সার্চ কনসোলে যুক্ত করুন। ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করুন সফলতা অবশ্যই পাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আইটি ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url