ব্লাড প্রেসার কমে গেলে বা বেড়ে গেলে করণীয়: সুস্থ থাকতে করণীয় পরামর্শ

ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাপকাঠি যা হৃদপিণ্ডের কর্মক্ষমতা এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালনের মান সম্পর্কে জানায়। স্বাভাবিক রক্তচাপ মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আমাদের শরীর সঠিকভাবে কাজ করে। কিন্তু কখনও কখনও রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যায় বা কমে যায়, যা শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্লাড প্রেসার কমে গেলে বা বেড়ে গেলে কী করণীয়।

ব্লাড প্রেসার, blood pressure, it blog, আইটি ব্লগ, আইটি ব্লগ অনলাইন, itblogonline, https://itblog.online

ব্লাড প্রেসার কমে গেলে করণীয়

রক্তচাপ কমে গেলে (হাইপোটেনশন) মস্তিষ্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ কমে যায়, যা মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, এবং জ্ঞান হারানোর মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

১. পর্যাপ্ত পানি পান

রক্তচাপ কমে গেলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এ কারণে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়ক হয়।

২. লবণ খাওয়া

লবণ শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ বাড়ায়, যা রক্তচাপ বাড়াতে সহায়তা করে। দ্রুত রক্তচাপ বাড়ানোর জন্য এক গ্লাস পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। তবে লবণের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।

৩. পা উঁচু করে শোয়া

যদি ব্লাড প্রেসার হঠাৎ কমে যায়, তাহলে পা উঁচু করে শোয়া উচিত। এটি রক্তকে সহজে হৃদপিণ্ডের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়, ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সহায়তা করে।

৪. ক্যাফেইন গ্রহণ

ক্যাফেইন রক্তচাপ দ্রুত বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। এক কাপ চা বা কফি পান করলে তা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে এবং অবস্থা উন্নত করে।

৫. খাদ্যাভ্যাস উন্নত করা

রক্তচাপ কমে গেলে সঠিক এবং পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা উচিত। ভিটামিন বি১২ এবং ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। পালংশাক, ডিম, মাছ এবং দুধ এই ধরনের খাদ্যের মধ্যে পড়ে।

ব্লাড প্রেসার বেড়ে গেলে করণীয়

রক্তচাপ বেড়ে গেলে (হাইপারটেনশন) এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই রক্তচাপ বেড়ে গেলে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

১. আরাম করে শোয়া

রক্তচাপ বেড়ে গেলে শারীরিক এবং মানসিক চাপ কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি আরামদায়ক জায়গায় শুয়ে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে শরীর ও মনকে শিথিল করা যেতে পারে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।

২. লবণ কমানো

উচ্চ রক্তচাপের সবচেয়ে বড় কারণগুলির মধ্যে একটি হল অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ। লবণ রক্তচাপ বাড়াতে প্রভাব ফেলে, তাই উচ্চ রক্তচাপ হলে খাদ্যে লবণ কমানোর চেষ্টা করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

৩. পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া

পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। কলা, আলু, শাকসবজি, ডাল, এবং কমলা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কার্যকর।

৪. পর্যাপ্ত পানি পান

রক্তচাপ বেড়ে গেলে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুবই জরুরি। পানি পান করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের হয়ে যায়, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

৫. নিয়মিত ব্যায়াম

হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে। প্রতিদিনের ব্যায়াম হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।

উপসংহার

ব্লাড প্রেসার কমে গেলে বা বেড়ে গেলে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উভয় ক্ষেত্রেই সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। তবে যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না আসে বা দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আইটি ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url