ত্বক ফর্সা করার সেরা ১০টি প্রাকৃতিক পদ্ধতি: সহজেই পান উজ্জ্বল ত্বক
ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক অনেকেরই আকাঙ্ক্ষিত। বর্তমানের দূষণ, অতিরিক্ত রোদে পুড়ে যাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। তবে কিছু প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি সহজেই ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারেন। নিচে ত্বক ফর্সা করার কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।
১. লেবুর রস ও মধুর ফেসপ্যাক
লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এক টেবিল চামচ লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে ও গলায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
২. টমেটো ও বেসনের প্যাক
টমেটোতে লাইকোপেন থাকে যা ত্বকের ট্যান দূর করতে সাহায্য করে। বেসন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে করে তুলতে পারে মসৃণ ও উজ্জ্বল। একটি টমেটো ব্লেন্ড করে তার সাথে দুই চামচ বেসন মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার
অ্যালোভেরা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বকের পিগমেন্টেশন কমায় এবং ত্বককে করে তোলে কোমল ও উজ্জ্বল। তাজা অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে সরাসরি মুখে লাগান। এটি সারা রাত রেখে সকালে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
৪. দুধ ও হলুদের ফেসপ্যাক
দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের দাগ দূর করতে সহায়ক। এক চামচ কাঁচা দুধের সাথে আধা চামচ হলুদ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান
ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। পানি ত্বকের ভেতর থেকে আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বকের টক্সিন দূর করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এর ফলে ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
৬. সানস্ক্রিন ব্যবহার
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি ত্বকের ট্যান, ডার্ক স্পট এবং পিগমেন্টেশন সৃষ্টি করে। তাই রোদে বের হওয়ার আগে অবশ্যই ত্বকের জন্য উপযোগী সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সানস্ক্রিন ত্বককে রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে।
৭. সুষম খাদ্য গ্রহণ
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ অপরিহার্য। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফলমূল, শাকসবজি, প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত ভিটামিন-যুক্ত খাবার রাখুন। বিশেষ করে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৮. পর্যাপ্ত ঘুম
পর্যাপ্ত ঘুম ত্বকের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। ঘুমের সময় ত্বক নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং মৃত কোষ দূর করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ত্বকে ক্লান্তি দেখা দেয় এবং উজ্জ্বলতা হ্রাস পায়।
৯. নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
ত্বককে হাইড্রেটেড রাখা উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার অন্যতম শর্ত। ত্বক শুষ্ক হলে তা মলিন ও কালচে দেখাতে পারে। তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার প্রতিদিন ব্যবহার করুন।
১০. ত্বকের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
প্রতিদিনের ধুলাবালি ও ময়লা ত্বকের রোমকূপে জমে যায়, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয়। তাই নিয়মিত মুখ পরিষ্কার রাখুন। মুখ ধোয়ার জন্য মাইল্ড ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন এবং মেকআপ থাকলে অবশ্যই তা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
উপসংহার
ত্বক ফর্সা করা বা উজ্জ্বল রাখা কোন এক দিনের কাজ নয়। এর জন্য দরকার নিয়মিত যত্ন এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। প্রাকৃতিক পদ্ধতি ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে আপনি সহজেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারেন। তবে দ্রুত ফল পাওয়ার আশায় কেমিক্যাল সমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহারের চেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নেয়াই ভালো।
আইটি ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url